বাংলায় নিষিদ্ধ হচ্ছে “জয় বাংলা” স্লোগান! কি বললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? 2025

বাংলাদেশে আবার অশান্তিতে উত্তাল হচ্ছে দেশ। তার মধ্যে জয় বাংলা শ্লোগান নিষিদ্ধ করা হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে! তবে কি এবার এপার বাংলায় ও বন্ধ হতে চলেছে জয় বাংলা স্লোগান! কি বলছেন মুখ্যমন্ত্রী?
বাংলাদেশে এই মুহূর্তে আবারো তৈরি হয়েছে অশান্তির আবহাওয়া। জাতির পিতা শেখ মুজিবর রহমানের বাড়ি পর্যন্ত ভাঙচুর করতে ছাড়েনি উগ্রবাদী হামলাকারীরা। এর বিরুদ্ধে অবশ্য অন্তর্বর্তী সরকার এর প্রধান উপদেষ্টা মোঃ ইউনুস করাবার্তা দিয়েছেন। কোন হামলাকারী ছাড় পাবে না। যারা ইতিহাস ভুলে যায় সেই জাতির কোন অস্তিত্ব বা ভবিষ্যৎ নেই।
ছাত্র আন্দোলনের জেরে গত আগস্ট মাসের ৫ তারিখে প্রধানমন্ত্রী পর থেকে ইস্তাফা দিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে আসেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর থেকে এতে নিয়ে ভারতে অবস্থান করছেন। কারণ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন তার মতে ভারত শক্তিধর দেশ হওয়ার পাশাপাশি শান্তিপ্রিয় দেশ। এখানে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার পায়।
তবে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আসার পর থেকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরো বিগ্রে গিয়েছে। সেখানে একের পর এক সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ভাঙ্গা মন্দির ভেঙে দেওয়া বাড়ির ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে একাধিক অত্যাচার শুরু হয়েছে। যার প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ভিডিও সোশ্যাল মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।

এই কারণেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আট দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন চালাচ্ছে। বৈঠকে বসলেও এখনো পর্যন্ত যতদূর জানা যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার তাদের এই আট দফা দাবি তেমন কোন গুরুত্ব দেয়নি। বাংলাদেশের বসবাসকারী সংখ্যালঘু হিন্দুরা চাইছেন তারা যাতে শান্তিতে বাংলাদেশে বসবাস করতে পারে তাদের উপর আতংবাদিদের মতো এইরকম হামলা যেন ক্রমাগত না হয়। এছাড়া আরো অনেক কিছু।
ইতিমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হলেন ড: মোহাম্মদ ইউনুস, শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশের যেভাবে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সূত্রের খবর অনুযায়ী:- তার মাঝেই আবার ইউনুস বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন জয় বাংলা স্লোগানকে নিষিদ্ধ করার জন্য! অনেক বিশেষজ্ঞদের মত, বর্তমানে ধীরে ধীরে বাংলাদেশ পাকিস্তানপন্থী হয়ে উঠছে। পাকিস্তানের আধিপত্য আবার পূর্বের মতো বিস্তার হতে চলেছে এই বাংলাদেশে।
তাই বাংলাদেশে যদি শেখ মুজিবর রহমানের জয় বাংলা স্লোগান থাকে সেক্ষেত্রে কোনোভাবেই সঠিকভাবে পাকিস্তানপন্থী হওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ এই জয় বাংলা স্লোগান তুলে দিতে পারলে বাংলাদেশকে বিশেষভাবে পাকিস্তানপন্থী করে তোলা সম্ভব হবে। কিন্তু জয় বাংলা স্লোগান যদি বাংলাদেশে থেকে যায় সে ক্ষেত্রে তার প্রভাব (বঙ্গবন্ধুর) বাংলাদেশীদের মনে থেকে যেতে পারে।
তাই ইউনুস সরকারের নেতৃত্বে এবার বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হয়ে যাচ্ছে জয় বাংলা স্লোগান। শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর এই জয় বাংলা স্লোগানকে মুছে দেওয়ার উপর বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে। কারণ ধরে নেওয়া হচ্ছে যারা জয় বাংলা স্লোগান দেবে তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আওয়ামী লীগের কর্মীবৃন্দ। তাই রাতে বাংলাদেশে শেখ মুজিবরের ইতিহাস মুছে ফেলা যায় সেই চেষ্টার দিকেই ধীরে ধীরে এগোচ্ছে বাংলাদেশের বেশ কিছু ছাত্র জনতা।
হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যাচ্ছে শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পরে মুহাম্মদ ইউনুস ও তার সাগরেদদের ভয়ে এই জয় বাংলা স্লোগান শুধু বাংলাদেশ থেকেই নয় বিদেশের মাটি থেকেও মুছে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই লন্ডনে যে সমস্ত বাংলাদেশি নাগরিকরা রয়েছেন যে সমস্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের হোটেল রেস্তোরা রয়েছে বা ক্যাফের মত ব্যবসা রয়েছে। যেখানে আগে জয় বাংলা স্লোগান ঠিকানাতে লেখা থাকতো এবার বাংলাদেশী ইউনুস সরকার ও তাদের ভয়ে সেগুলো মুছে ফেলা হচ্ছে।
কারণ যে সমস্ত নাগরিকরা লন্ডনের মাটিতে বসবাস করছেন তাদেরও বংশধর বা পরিবার-পরিজন বাংলাদেশের রয়েছে। তাই যাতে তাদের উপর কোন সমস্যার তৈরি না হয় সেই জন্যই এইরকম সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে বলে একাধিক বিশেষজ্ঞদের মত।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে কি পশ্চিমবঙ্গে মুছে যাবে? জয় বাংলা স্লোগান?
লন্ডনের মাটিতে অর্থাৎ বিদেশের মাটিতে মুছে ফেলা হচ্ছে জয়বাংলা স্লোগান এটা জানতে পেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভীষণ চটেছেন। বিধানসভায় সবার হয়েছেন তিনি তিনি জানিয়েছেন এটা কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা থেকে নেওয়া স্লোগান জয় বাংলা। তাই বাংলাদেশে এই স্লোগান নিষিদ্ধ হলেও ভারতের মাটিতে পশ্চিমবঙ্গে এই স্লোগান নিষিদ্ধ হবে না, যেমন চলছে তেমনি চলবে।

বাংলাদেশের ইতিমধ্যে অশান্তির পরিবেশ চলছে সেখানে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার তাদের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হচ্ছে। ধরে নেওয়া হচ্ছে যারা এই জয় বাংলা স্লোগান দিচ্ছে তারা আওয়ামী লীগের সদস্যবৃন্দ। তবে মুখ্যমন্ত্রী যেদিন জানান জয় বাংলা স্লোগানটি কাজী নজরুল ইসলামের একটি কবিতা থেকে নেওয়া।
বাংলা এবং বাঙালির ঐতিহ্যকে তুলে ধরার জন্যই এই স্লোগান পশ্চিমবঙ্গে ব্যবহার করা হয়। তাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি যাই হোক না কেন পশ্চিমবঙ্গে জয় বাংলা স্লোগান যেমন ছিল তেমন থাকবে।
ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত বিবাদ! চলছে বেড়া দেওয়া!
এদিকে ভারত এবং বাংলাদেশের সীমান্ত নিয়েও তৈরি হয়েছে চরম উত্তেজনা। লাগাতার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশ করার চেষ্টা করছে। সাথে বেআইনি চোরাচালান কারবার করছে এই বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা। আর সেই গুলোর রাখার জন্যই বিএসএফের তরফ থেকে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সীমান্ত বরাবর কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল একাধিক জায়গায়। বিশেষ করে যে সমস্ত উন্মুক্ত সীমান্ত এলাকায় রয়েছে যেখান থেকে অবাধে গরু পাচার থেকে শুরু করে একাধিক চোরাকারবার চলে সেই সমস্ত জায়গা গুলি কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে সুরক্ষিত করার চেষ্টা করা হচ্ছিল বিএসএফের তরফ থেকে।
যাতে সীমান্তবর্তী গ্রামবাসীরা নিরাপদে থাকতে পারে এবং তাদের উপর কোন অত্যাচার না হয় সেই ব্যবস্থা করা হয়েছিল বিএসএফের তরফ থেকে। ভারতীয় সীমান্তের একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগ করেছে যে তাদের চাষ করা জমির ফসল কেটে নিয়ে চলে যায় বাংলাদেশি উগ্রপন্থীরা। কিছু বলতে গেলে মারতে আসে মারার হুমকি দেয়। তাই তারা বিএসএফের দ্বারস্থ হয়ে এর সুরাহা করার আবেদন করেন।
সমস্ত কিছু দেখছেন তা ভাবনা করে বিএসএফের কর্মকর্তারা এই কাঁটাতারের বেড়া বাংলাদেশ সীমান্তে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু নিলে কি হবে বাংলাদেশের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স বি জি বি এই কাঁটাতারের বেড়া লাগানো তে আপত্তি জানায় বিএসএফকে। বাধ্য হয়ে কিছু কিছু জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া লাগানোর কাজ বন্ধ করতে হয় বিএসএফকে।
তবে কিছু এলাকায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বসবাসকারী ভারতীয় গ্রামবাসীরা তাদের নিজেদের জমিতে বেড়া দেয়ার কাজ করে। যাতে করে তাদের চাষ করা ফসল বাংলাদেশি চোরেরা কেটে নিয়ে যেতে না পারে। সেই জন্য গ্রামবাসীদের সহযোগিতা নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী সদস্যগণ অর্থাৎ বিএসএফ বর্ডার এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া লাগানোর কাজ শুরু করেছেন। বেড়া অবশ্য বিএসএফ না লাগালেও গ্রামবাসীরা কিন্তু কোন অংশেই পিছিয়ে নেই। তারা নিজেদের জন্য রক্ষা করার জন্য নিজেরাই এগিয়ে গেছেন সীমান্তে।
গ্রামবাসীদের দাবি বছরের পর বছর ফসল চাষ করছি আমরা, কিন্তু সেই ফসল ভোগ করতে পারছি না ফসল কেটে নিয়ে পালাচ্ছে ওরা। কিছু বলতে গেলেই লাঠি সোটা নিয়ে মারতে আসছে। তাই এই বেড়া লাগানোর কাজ আমরা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে শুরু করেছি।
শেখ হাসিনা দেশ থেকে চলে আসার পরে অনেকেই ভেবেছিলেন বাংলাদেশের উন্নতি শীঘ্রই হবে। কিন্তু ধীরে ধীরে বাংলাদেশে আবারও বেশ শৃঙ্খলা ও চরম উত্তেজনা দেখা দিচ্ছে দিকে দিকে। শেখ মুজিবর এর বাড়ি ভাঙচুর থেকে শুরু করে, বঙ্গবন্ধুর মূর্তি সমস্ত কিছুই ভাঙ্গা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এখন কবে বাংলাদেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয় সেটাই দেখার বিষয়।