লক্ষীর ভান্ডারে শূন্য হলেও মহিলারা পাবে ফ্রিতে মোবাইল। 2025 বাজেটে মহিলাদের কি সুখবর?

২০২৫ সালের এই নতুন রাজ্য বাজেটে লক্ষ্মী ভান্ডার প্রকল্পের টাকা বাড়েনি তবে বড় সুখবর হলো মহিলারা পাবে ফ্রিতে মোবাইল। তবে কারা কারা এই মোবাইল পাবেন এছাড়া বাজেটে কি কি ঘোষণা করা হয়েছে সমস্ত কিছু নিয়ে নিম্নে আলোচনা করা হলো।
বাজেটের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়?
২০২৫ সালের রাজ্য বাজেটের দিকে তাকিয়ে ছিলেন আপামর বাঙালি। নিশ্চয়ই গতবারের বাজেটের মতোই লক্ষী ভান্ডার থেকে শুরু করে অন্যান্য প্রকল্পের অর্থ বরাদ্ধ বাড়তে পারে। তবে এসেই সমস্ত আশার বেশিরভাগই এখন অদূর ভবিষ্যৎ। কারণ লক্ষী ভান্ডার প্রকল্পের টাকা বাড়েনি এই বাজেটে। শুধু লক্ষী ভান্ডার প্রকল্পই নয়, কৃষক বন্ধু প্রকল্পের টাকা ও বাড়েনি এই বাজেটে, সঙ্গে বার্ধক্য ভাতা বিধবা ভাতা বা প্রতিবন্ধী ভাতা তেও কোন অর্থ বাড়ানো হয়নি।
এক নজরে কি কি ঘোষণা হলো?
- রাজ্য বাজেটে যে সমস্ত ঘোষণাগুলো হয়েছে তার ৫০ শতাংশ মহিলা ও শিশুদের জন্যই বরাদ্দ করা হয়েছে।
- রাজ্য সরকারই যে সমস্ত কর্মচারীরা রয়েছেন তাদের জন্য ৪ শতাংশ করে DA বাড়ানো হয়েছে অর্থাৎ এবার থেকে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ১৮ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা পাবেন।
- এতদিন ধরে মেদিনীপুরবাসীরা বর্ষা কালীন সময়ে জলে ভেসে যেতেন বন্যার কারণে। বাড়িঘর ভেঙে যেত একাধিক ক্ষয়ক্ষতি সম্মুখীন হতে হতো। তবে এবার এই বাজেটে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান এর জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তাহলে আমজনতার সুবিধা হবে এই প্রকল্প থেকে।
- লক্ষী ভান্ডার প্রকল্পের টাকা ২০২৫ সালের রাজ্য বাজেটে বাড়ানো হয়নি। অনেকেই আশা করছিলেন হয়তো ৫০০ টাকা লক্ষী ভান্ডার প্রকল্পে বাড়ানো হবে। তবে এই বাজেটে তেমন কোন ঘোষণা করা হয়নি।
- ইতিমধ্যে নদীমাতৃক এলাকায় যে সমস্ত মানুষজনরা বাস করেন তাদের জন্য সুখবর কারণ এবারে বাজেটে নদীবন্ধন প্রকল্পে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করা হয়েছে। যার মাধ্যমে নদীমাতৃক এলাকা গুলির ক্ষয়ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে, যার জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে নতুন এসওপি তৈরি হতে পারে।
- গ্রাম থেকে শুরু করে শহর অঞ্চলে এখনো পর্যন্ত বহু রাস্তাঘাট তৈরি বাকি রয়েছে আর এবার সেই সমস্ত রাস্তাঘাট তৈরির জন্য নতুন করে ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে পথশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে। এই প্রকল্পের মাধ্যমেই গ্রাম বাংলার প্রত্যেকটা কাঁচা রাস্তা কে পাকা রাস্তা করা হতে পারে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে।
- প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে বাড়ির টাকা দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার তাই রাজ্য সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে টাকা দেওয়া শুরু করেছে। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রথম ৬০ হাজার টাকা প্রায় ১২ লক্ষ উপভোক্তার ব্যাংক একাউন্টে পাঠানোর কাজ প্রায় শেষের পথে। তবে এবার যে সমস্ত উপভোক্ত তারা ওয়েটিং লিস্টে ছিলেন তাদেরকেও টাকা দেওয়ার কাজ শুরু হচ্ছে অর্থাৎ প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা আসছে ডিসেম্বর মাসেই এই সমস্ত উপভোগ তাদের ব্যাঙ্ক একাউন্টে ঢুকে যেতে পারে। পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্টে যে সমস্ত উপভোক্তা রয়েছেন তাদের টাকা দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই ৯৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে রাজ্য বাজেটে।
- এছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার একটি বড় তীর্থস্থান বা ধর্মীয় মেলা গঙ্গাসাগর। এই গঙ্গাসাগর মেলায় পৌঁছানোর জন্য ইতিমধ্যে নতুন করে সেতু নির্মাণের কাজ হবে আর এই গঙ্গাসাগর সেতুর চার লেন তৈরি করতে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। এরপরে উপকৃত হবেন একাধিক ধার্মিক ভক্তরা যারা গঙ্গাসাগরে যেতে চান।
- এছাড়া যে সমস্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা লোন নিয়ে ব্যবসা করতে চান বা নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়ে স্বনির্ভর হতে চান তাদের জন্য রাজ্য বাজেটে বড় ঘোষণা এবার সেল্ফ হেল্প গ্রুপের মাধ্যমে আর্থিক সাহায্য করা হবে মহিলাদের তারা আর্থিক সাহায্য নিয়ে ব্যবসা করে নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারবেন। এর জন্য ৮১,৯৭২.৩৩ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব বাজেটে জানানো হয়েছে।
- এছাড়াও মহিলা এবং শিশু কল্যাণের জন্য যে সমস্ত প্রকল্পগুলি রয়েছে সেই সমস্ত প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে প্রায় ৩৮ হাজার ৭৬২.০৩ কোটি টাকা।
রাজ্য বাজেটে সবথেকে বড় ঘোষণা মহিলাদের ফ্রিতে মোবাইল দেওয়া:-
২০২৫ সালের নতুন এই রাজ্য বাজেটে মহিলাদের জন্য দারুন একটি সুখবর ঘোষণা করা হয়েছে এবার মহিলাদেরকে বিনামূল্যে একটি করে স্মার্টফোন দেওয়া হবে। যা নিয়ে তারা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। এই স্মার্টফোনগুলি কত টাকার হবে সেই বিষয়ে বিশেষ ধারণা না দেওয়া হলেও, মহিলাদের এই স্মার্টফোন দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই বাজেটে প্রায় 200 কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
কারা ফ্রি মোবাইল পাবে আর কারা পাবে না?
যে সমস্ত মহিলারা অঙ্গনারী এবং আশা কর্মীর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তাদেরকেই এই স্মার্টফোন দেওয়ার কথা ঘোষণা হয়েছে বাজেটে। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী একাধিক জনসভায় ঘোষণা করেছিলেন যে সমস্ত অঙ্গনারী কর্মী এবং আশা কর্মী মহিলারা স্মার্টফোন এখনো পর্যন্ত পাননি! তাদেরকে একটি করে ফ্রিতে মোবাইল দেওয়া হবে। এবং সেই সমস্ত মোবাইল তৈরীর কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। আর এবারে 2025-26 এর নতুন অর্থবছরে মহিলাদের ফ্রি মোবাইল দেওয়া নিয়েও বড় ঘোষণা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সাধারণ যে সমস্ত মহিলারা রয়েছেন তারা কিন্তু এই মোবাইল পাবেন না