রাজ্যের সমস্ত মানুষদের জন্য এক নতুন প্রকল্পের উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার 2025

এখনো পর্যন্ত এই প্রকল্পে ২১ লক্ষ মানুষ নাম নথিভুক্ত করে ফেলেছে। নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে আপনিও পেতে পারেন টাকা। আপনার হাতে কিন্তু বেশি সময় নেই, শেষ নাম নথিভুক্তের তারিখ হল ৩১ শে জানুয়ারি।
আমাদের এই রাজ্যের সাধারণ মানুষদের সাহায্যের কথা চিন্তা করে তাদের জন্য একের পর এক নতুন প্রকল্প চালু করছে আমাদের রাজ্য সরকার। যেমন:- লক্ষী ভান্ডার থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য সাথী ও যুবশ্রী কন্যাশ্রী, রূপশ্রী মতো প্রকল্প চালু করেছে। এই সমস্ত প্রকল্পে আবেদন করলে কোন প্রকল্পে ১০০০ টাকা আবার কোন প্রকল্পে ১৫০০ টাকা পাওয়া যায়, আবার কিছু প্রকল্প তো এমনও রয়েছে যে প্রকল্পে আবেদন করলে ২৫ হাজার টাকা ব্যাংক একাউন্টে পাওয়া যাচ্ছে।
এছাড়া সরকারি নানা রকম মাসিক ভাতার ব্যবস্থা রয়েছে যার মধ্য দিয়ে অনেক মানুষ একটু হলেও স্বস্তি পেয়েছেন। ঠিক এমন ভাবে চাষীদের জন্য রাজ্য সরকার এক নতুন সহায়ক মূলক নতুন প্রকল্প শুরু করলেন। এর একটাই কারণ, বন্যা ঝড়, বৃষ্টি ,ক্ষরা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চাষীদের ফসলের যখন ভীষণ ক্ষতি হয় তখন চাষীদের মাথায় হাত পড়ে যায়।
আর সেই ক্ষতির অংশ একটু কমানোর জন্যই চাষীদের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন।পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের নাম দিলেন বাংলা শস্য বীমা যোজনা প্রকল্প।
এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো, যে সমস্ত চাষীদের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসল ক্ষতি হয়ে যায়, বা যে সমস্ত চাষিরা কোন কারণে চাষাবাদ করতে পারেনা, তাদের এই প্রকল্পের মাধ্যমে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় রাজ্য সরকার। এখানে রাজ্য সরকার চাষীদের হয়ে এই বিমার প্রিমিয়াম দিয়ে দেয় বলেই চাষীদের ক্ষয়ক্ষতির স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দেখা যায়। তাই তারা ঠিকঠাক তথ্য যাচাই করার পরেই কৃষকদের ব্যাংকে সরাসরি টাকা দিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা নেয়। আগের বছরও ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেখার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্য সরকার তার পদক্ষেপ নেয়।

এই যোজনায় ২১ লাখ কৃষক নাম লিখেছেন:-
এই প্রকল্পের তথ্যসূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে আগামী বছরে ফসলের ক্ষতিপূরণের জন্য যে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছিল, তা ধানের চাষের পাশাপাশি আলু চাষীদেরও এই বীমা প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। এই প্রকল্পের প্রিমিয়ামের টাকা পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিজেই বহন করে থাকে। এর জন্যই এই প্রথমবার এই রবি মরশুমে আলুর চাষীরা বিশেষ সুযোগ সুবিধা পাবে। অন্যদিকে অন্য বছরে যেভাবে কৃষকরা এই প্রকল্পে নাম লেখান, এবছরে ইতিমধ্যে তার থেকেও অনেক বেশি লোক নাম লিখেছেন বলে জানা যায়, এই মরশুমে শস্য বীমা প্রকল্পে প্রায় 21 লক্ষ কৃষক ইতিমধ্যে নাম লিখিয়েছেন এই প্রকল্পে নাম লেখানো হবে ৩১ শে জানুয়ারি পর্যন্ত। তবে এই প্রকল্পের নাম লেখাতে হলে অবশ্যই আবেদনকারীকে একজন কৃষক হতে হবে।
এই প্রকল্পে ধাপে ধাপে টাকা পাঠানোর শুরু কবে?:-
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার বাংলার এই সমস্ত চাষীদের জন্য, এই প্রকল্পে 350 কোটি টাকা প্রিমিয়াম দিয়েছে। এছাড়া খারিফ মরশুমে যে সমস্ত কৃষক দের চাষের ক্ষতি হয়েছে ,তাদের ৮ই জানুয়ারি থেকে টাকা পাঠানো শুরু হতে পারে বলে সূত্রের খবর অনুযায়ী জানা যাচ্ছে। এছাড়া কৃষকরা প্রতিবছরই জানুয়ারি মাসে শেষে কিংবা ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথমেই এই ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়ে থাকে।
এই প্রসঙ্গে নবান্নের বৈঠক করে রাজ্য সরকার। আর এই বৈঠকে প্রতিটি জেলায় কৃষি ও যে সমস্ত সংশ্লিষ্ট যে সমস্ত আধিকারী আছেন ,তাদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। কৃষি বৈঠকের সময় সেখানে ছিলেন বর্তমানে কৃষি সচিব ওঙ্কার সিং মিনাও । এ ছাড়া আলোচনার মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, এই প্রকল্পের সুবিধা যেন প্রত্যেকটা চাষীর ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হয় ।এছাড়াও তাদের মতে, দেশের সমস্ত জায়গার দেশের মধ্যে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গই সরকারি কৃষকদের সহায়তার জন্য এই প্রেমিয়ামের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন বা করছেন। প্রতিবছর রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় এই প্রকল্পের মাধ্যমে। বর্ষার কারণে ফসলের ক্ষতি হলে কিংবা ডিভিসির জল ছাড়ার কারণে আলু চাষিদের ক্ষতি হলে কিংবা ঝড়-বৃষ্টিতে কৃষকদের ক্ষতি হলে সেই সমস্ত ফসলের পর্যবেক্ষণ করে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয়। তারপর সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে সেই ক্ষতির টাকা পৌঁছে দেওয়া হয় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।
আবেদনের পদ্ধতি:-
এছাড়াও কৃষকরা দুয়ারে সরকার ক্যাম্প থেকে এই প্রকল্পের আবেদনের সহযোগিতা পেতে পারেন। কত যে সমস্ত কৃষকরা চাষবাস করেছেন ভবিষ্যতে যদি তাদের ফসলের ক্ষতি হয়, সেই ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার জন্যই এই প্রকল্পটি তৈরি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই ফসলের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে এবং তার ক্ষতিপূরণ পেতে এই প্রকল্পে অবশ্যই আবেদন করে রাখুন।