বাতিল হচ্ছে প্রচুর আবাসের ঘর! পাবেন না দ্বিতীয় কিস্তি 60000 টাকা!

ইতিমধ্যেই আবাস যোজনা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। তবে এবার বাতিল হচ্ছে প্রচুর আবাসের ঘর! কেন বাতিল করা হচ্ছে বাড়ি? কারা আর দ্বিতীয় পেতে ৬০ হাজার টাকা নাও পেতে পারেন? সমস্ত কিছু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো….
Table of Contents
বাংলা আবাস যোজনা:-
কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, যে তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২৮ থেকে ৩০ লক্ষ উপভোক্তার নাম ফাইনাল লিস্টে ছিল। কিন্তু বিশেষ কিছু কারণবশত কেন্দ্র এবং রাজ্যের মনোমালিনের কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে এই টাকা পশ্চিমবঙ্গের প্রাপ্য উপভোক্তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়নি, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে।
তবে কেন্দ্র না দিলেও রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল। যারা আপ্রকৃত উপভোক্তা রয়েছেন যাদের মাথার উপর ছাদ নেই তাদের পাকা বাড়ির ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার। এবং সেই মতো রাজ্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে-গত ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই আবাস যোজনার টাকা দেওয়া শুরু হয়েছে। যে টাকা নিয়ে অনেকেই বাড়ি বানানোর কাজ শুরু করেছেন। প্রথম কিস্তির 60 হাজার টাকা প্রায় ১১-১২ লক্ষ্য উপভোক্তার ব্যাংক একাউন্টে ঢুকে গেছে। তবে কিছু উপভোক্তা রয়েছেন যারা এখনও পর্যন্ত কোনো কারণবশত এই আবাস যোজনার টাকা পাননি। যাদের পরবর্তী কিস্তিতে টাকা দেওয়া হতে পারে।
বন্ধ হচ্ছে বিনামূল্যের রেশন! রেশনের বদলে টাকা দেবে?
বাড়ির কাজ শেষ করতে নির্দেশ রাজ্যের:-
রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী যে সমস্ত জায়গায় আবাস যোজনার কাজ এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ণ হয়নি বা যারা আবাস যোজনার কাজ শুরু করতে পারছেন না, সেই সমস্ত উপভোক্তাদের সুবিধা করার জন্য রাজ্যের আধিকারিকদের নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফ থেকে। ফলে যত দ্রুত সম্ভব ওই সমস্ত উপভোক্তাদের বাড়ি শুরু করার ব্যবস্থা করতে হবে নির্দেশ অনুযায়ী। নবান্ন সূত্রে খবর অনুযায়ী জানা যাচ্ছে মে মাসের আগেই সমস্ত উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরীর কাজ শেষ করে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মে মাসের মধ্যে বাড়ি তৈরীর কাজ শেষ হলে শুরু হবে ছবি তোলার কাজ।

সময়ের আগেই বাড়ি বাড়ি চলছে সার্ভের কাজ:-
ইতিমধ্যে এই যে সমস্ত উপভোক্তাদের ব্যাংক একাউন্টের প্রথম কিস্তির 60000 টাকা ঢুকে গেছে। এবং যারা বাড়ি তৈরীর কাজ শুরু করেছেন। তাদের বাড়িতে বাড়িতে পরিদর্শক যাচ্ছেন ছবি তোলার জন্য বা সার্ভে করার জন্য। সময়ের আগেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে শুরু হয়েছে এই ছবি জেলার কাজ। যেহেতু রাজ্যের নির্দেশ মে মাসের মধ্যেই বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করতে হবে। তাই তৎপর রয়েছে রাজ্য প্রশাসন। তবে ছবি তুলতে গিয়ে একের পর এক নতুন অভিযোগ উঠে আসছে, দেখা দিয়েছে নতুন বিপত্তি। বাতিল হতে পারে প্রচুর উপভোক্তার নাম!
কাদের নাম বাতিল হতে পারে? বাতিল হচ্ছে প্রচুর আবাসের ঘর!
আবাস যোজনা প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা দেওয়ার পর যারা বাড়ি তৈরীর কাজ শুরু করেছেন। তাদের বাড়ি বাড়ি শুরু হয়েছে সার্ভে। তবে আধিকারিকরা গিয়ে দেখছেন, আবাস যোজনার নিয়ম না মেনে প্রচুর মানুষ আবাস যোজনার টাকা খরচ করেছে অন্যভাবে। যেগুলো আদেও আবাস যোজনার বাড়ি তৈরীর নিয়মের মধ্যে পড়ে না।
১) আবাস যোজনার উপভোক্তা লিস্টে নাম থাকায় প্রথম কিস্তির 60000 টাকা পেয়েছেন বাড়ি বানানোর জন্য। কিন্তু সার্ভেতে গিয়ে আধিকারিকরা দেখছেন, সেই উপভোক্তা বাড়ি না তৈরি করে আবাস যোজনার টাকা দিয়ে নিজের বাড়ির মেঝে ঢালাই করেছেন।
২) আবাস যোজনার নিয়ম অনুযায়ী বাড়ি তৈরি করতে প্রথমে কলাম তুলতে হয়। কলাম উঠে গেলে তার উপরে ঢালাই এর বাইন্ডিং দিয়ে তারপর গাথুনি করতে হয়। কিছু ক্ষেত্রে কলাম না দিয়েও সরাসরি বোনেদ বা ভীত থেকে বাড়ি তৈরি করা যায়। জানালা কিংবা লিটন পর্যন্ত কাজ করার পরে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাওয়া যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে আধিকারিকরা দেখছেন, কিছু উপভোক্তা পুরানো দেওয়াল রেখে দিয়েছেন। এবং আবাস যোজনার টাকা দিয়ে শুধুমাত্র সামনের দুটো কলাম দাঁড় করিয়েছেন। ঘর গাঁথুনি বা অন্যান্য কোন কাজ কিছুই করেননি।
৩) কিছু উপভোক্তা বাড়ির টাকা পেয়েছেন, কিন্তু আগে থেকে বাড়ি থাকার কারণে বাড়ি না তৈরি করে শুধুমাত্র বাড়ির সামনে ছোট করে একটি রান্না ঘর তৈরি করেছেন। যা আবাস যোজনার নিয়মের মধ্যে পড়ে না।
কিছু উপভোক্তা বলছেন আমরা কিভাবে বাড়ি তৈরি করতে হয় বা আবাস যোজনার বাড়ি বানাতে কি কি নিয়ম রয়েছে সেগুলো জানিনা তাই যেমনভাবে পেরেছি বাড়ির কাজ করছি।
কিন্তু আধিকারিকরা জানাচ্ছেন যে আবাস যোজনার বাড়ি পেতে হলে বা দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেতে হলে, প্রথম কিস্তির যে টাকাটা ব্যাংক একাউন্টে দেওয়া হয়েছে। সেই টাকা দিয়ে আবাস যোজনার বাড়ি তৈরি করতে হবে। সেক্ষেত্রে 60000 টাকায় যদি জানালা বা লিলটন পর্যন্ত গাথুনি করা নাও সম্ভব হয়। যতটুকু পর্যন্ত সম্ভব হবে কাজ করে রাখতে হবে। তাহলেই পরের কিস্তির 60000 টাকা অর্থাৎ দ্বিতীয় কিস্তির টাকা ব্যাংক একাউন্টে ঢুকবে।
দ্বিতীয় কিস্তির টাকা কবে পাওয়া যাবে?
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আবাস যোজনার দ্বিতীয় কিস্তির টাকা, দেওয়া হবে জুন মাসে। তবে সময়ের আগে যেমন সার্ভে শুরু হয়েছে পুরো সার্ভের কাজে যদি সময়ের আগে শেষ করা সম্ভব হয় সে ক্ষেত্রে আবাস যোজনার দ্বিতীয় কিস্তির টাকা ও জুন মাসের আগেও আপনাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আসতে পারে।
পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্টে নাম থাকলে কবে টাকা পাওয়া যাবে?
আবাস যোজনার পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্টে প্রায় ১৬ লক্ষ উপভোক্তা নাম রয়েছে। যারা পরবর্তীতে প্রথম কিস্তি ৬০ হাজার টাকা পাবেন। রাজ্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আপনারও নাম যদি এই লিস্টে থেকে থাকে তাহলে আগামী ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই প্রথম কিস্তির 60000 টাকা আপনাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দেওয়া শুরু করবে রাজ্য সরকার। প্রথম ৬০ হাজার টাকা দিয়ে বাড়ি বানানোর কাজ শুরু করলে পরবর্তীতে বাকি ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হবে ব্যাংক একাউন্টে।
আবাস যোজনায় নতুন নাম কিভাবে নাম তুলবেন?
যারা আবাস যোজনায় ঘর পাওয়ার যোগ্য, যাদের কাঁচা বাড়ি, আর্থিক অবস্থা খারাপ, কোন কারণবশত তাদের যদি আবাস যোজনার লিস্টে নাম না উঠে বা আবাস যোজনা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। সেক্ষেত্রে তারাও আবাস যোজনা লিস্টে নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। আবাস যোজনায় নাম তোলার সব থেকে সহজ উপায় হল সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে বল বা সরাসরি দিদিকে বল নাম্বারে ফোন করে জানানো।
আপনার যদি আবাস যোজনার বাড়ির প্রয়োজন হয় তাহলে 9137091370 এই নাম্বারে ফোন করে আপনার অভিযোগ জানাতে পারেন। আধিকারিকরা যদি মনে করেন তাহলে আপনার বাড়িতে নতুন করে সার্ভে দল আসবে। এবং যাচাই করার পর আপনার নামেও একটি পাকা ঘর দেওয়া হবে যদি আপনি পাকা ঘর পাওয়ার যোগ্য হন।