কেন হোলি উৎসব পালন করা হয়? 2025 জানুন পৌরাণিক কাহিনী! Holi date

হোলি এবং দোল উৎসব বাঙালির জীবনে অতপ্রতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। প্রতিবছরই ফাল্গুন মাসে পালিত হয় এই দোল এবং হোলি উৎসব। কেন হোলি উৎসব পালন করা হয়? এই দিনটি মূলত রংয়ের উৎসব। একে অপরকে রং লাগিয়ে আনন্দ এবং শুভেচ্ছা প্রকাশ করা হয়। তবে হোলি উৎসব পালন এবং দোল উৎসব পালনের পিছনে বেশ কিছু পৌরাণিক কাহিনী রয়েছে। ২০২৫ সালের তারিখ অনুযায়ী ১৪ই মার্চ ২০২৫ এবং বাংলাতে ২৯ এ ফাল্গুন ১৪৩১ দোল বা হোলি উৎসব পালন করা হবে শুক্রবার।
বিষয়সূচি:-
কেন হোলি উৎসব পালন করা হয়?
প্রতিবছর ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালন করা হয় রংয়ের উৎসব হোলি। তবে এই উৎসবটির সঙ্গে বেশ কয়েকটি পৌরাণিক কাহিনী জড়িত রয়েছে। পৌরাণিক গ্রন্থ অনুযায়ী জানা যায় সত্যযুগে হিরণ্যকশপ নামে একজন দৈত্য রাজা ছিলেন। জেনে নিজেকে ভগবান রুপে প্রচার করতে চাইতেন জনগণের মাঝে।

তার ঘোষণা অনুযায়ী রাজ্যের প্রত্যেকটা বাড়িতে কোন দেবদেবী নয় বরং তার মূর্তি স্থাপন করতে হবে এবং তাকেই পুজো করতে হবে। কিন্তু এর বিরোধিতা অন্য কেউ করেননি তার নিজের সন্তান ভক্ত প্রহ্লাদ এর বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি কোনভাবেই নিজের পিতা কে ভগবান বলে মানতেন না।
তার এই অস্বীকার করাকে কেন্দ্র করে হিরণ্য কশ্যপ পুত্র প্রহ্লাদ কে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। ষড়যন্ত্রের সময়ে তিনি ভক্ত প্রহ্লাদকে একাধিক কঠিন পরীক্ষা দিতে বাধ্য করেছিলেন। তিনি ও জানিয়েছিলেন যদি প্রহ্লাদ নিজের পিতা কে ভগবান বলে মেনে নেন, তাহলে তাকে জীবন দান করা হবে।
জায়গা জমি নিয়ে সম্পূর্ণ নতুন পরিষেবা চালু হলো! এবার কি কি সুবিধা হবে?
কিন্তু জীবনের মায়া ত্যাগ করে তিনি কোনভাবেই তা স্বীকার করেননি। আর সেই কারণেই হিরণ্য কশ্যপ পুত্র প্রহ্লাদকে বধ করার জন্য তার নিজের বোন হলিকার সাহায্য নেন। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী এই হোলিকা ত্রিদেবের দেব ব্রহ্মাদেবের থেকে আশীর্বাদ পেয়েছিলেন, তিনি অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে প্রবেশ করলেও আগুন তাকে স্পর্শ করতে পারবে না।

আর এই আশীর্বাদকে কাজে লাগিয়ে, দাদার কথামতো তিনি ভাইপো প্রহ্লাদকে নিজের কোলে বসিয়ে অগ্নিকুণ্ডে প্রবেশ করেন। যাতে আগুনে পুড়ে ভাইপো প্রহ্লাদ প্রান ত্যাগ করেন। কিন্তু অগ্নিকুণ্ডে ঘটেছিল ঠিক তার উল্টোটি। ভক্ত প্রহ্লাদ নিজের পিসির কোলে কৃষ্ণ নাম জপ করার ফলে আগুন তাকেও কোন স্পর্শ করতে পারেনি।
বরং পিসি হোলিকা নিজেই আগুনে পুড়ে ভস্ম হয়ে যান। এরপর ভগবান কৃষ্ণ হিরণ্যকশ্যপকে হত্যা করেন। তারপর থেকেই শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলে আসছে এই হোলি উৎসব। এককথায় মন্দের উপর ভালোর জয় অন্ধকারের উপর আলোর জয় হিসাবেই এই হোলি উৎসব পালন করা হয়। ফাল্গুন মাসে পূর্ণিমা তিথিতে হোলি উৎসব পালন করা হয়।
আবাস যোজনা সার্ভে প্রচুর নাম বাতিল হতে পারে? কারা পাবে না দ্বিতীয় কিস্তির ষাট হাজার টাকা!
এবং হোলির আগের দিনকে হোলিকা দহন বলা হয়। এই উৎসবটিকে হিন্দু ধর্মের অতি প্রাচীন উৎসব হিসাবে মানা হয়। জানা যায় যীশুখ্রীষ্টের জন্মেরও প্রায় ৩০০ বছর আগেও এই হোলি খেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তার মধ্যে প্রমাণস্বরূপ মধ্যযুগীয় কিছু চিত্রকর্ম ছিল যেগুলো ১৬ শতকের আহমেদনগর চিত্রকর্ম বুন্দি চিত্রকর্ম মিনেচার মেয়ওযার চিত্রকর্ম নামেও পরিচিত। এছাড়া বৃন্দাবনে ও রাধা কৃষ্ণের মিলন উৎসব উপলক্ষে হোলি পালন করা হয়ে থাকে।

নবদ্বীপে দোল উৎসব কেন পালন করা হয়?
পশ্চিমবঙ্গের সব দেখে বড় তীর্থস্থান এর মধ্যে বৈষ্ণবদের জন্য নবদ্বীপ মায়াপুর একটি বড় তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত। এখানে বৈষ্ণব ধর্মের প্রচারক যাতে হিন্দুরা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অবতার হিসাবে মানতেন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু। যার জন্ম ফাল্গুনীর দোল পূর্ণিমার তিথিতে নবদ্বীপের মাটিতে হয়েছিল। তাই দোল পূর্ণিমার এই দিনটিকে দোল উৎসব হিসাবে পালিত হয় নবদ্বীপে। খুব জাঁকজমক করেই এই উৎসবটি কে আনন্দের সঙ্গে উদযাপিত করা হয়। নবদ্বীপের বিখ্যাত মন্দির ইসকনে আনুষ্ঠানিকভাবেও দল উৎসব পালন করা হয়। দেশ বিদেশ থেকে প্রচুর ভক্ত এই দোল উৎসব দেখার জন্য ছুটে আসেন নবদ্বীপের মাটিতে।
ভারতবর্ষের কোথায় কোথায় দোল বা হোলি পালন করা হয়?
ভারত বর্ষ মূলত হিন্দু প্রধান দেশ তাই হিন্দুদের রীতি-নীতি রেওয়াজ আচার-আচরণ ভারতবর্ষের প্রায় প্রত্যেকটা রাজ্য প্রত্যেকটা জেলাতেই দেখা যায়। দু একটি এলাকা ছাড়া ভারতবর্ষ জুড়ে প্রায় বেশিরভাগ অঞ্চলেই এই দোল উৎসব এবং হোলি উৎসব পালন করা হয়। তবে এখন শুধুমাত্র ভারতবর্ষেই নয়, ভারতবর্ষের বাইরে ও বহু বিদেশি দেশে এই হোলি উৎসব পালন করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গে দোল উৎসবকেই বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই দিন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মদিন উপলক্ষে পালন করা হয় সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে। ২০২৫ সালের তারিখ অনুযায়ী ১৪ই মার্চ ২০২৫ এবং বাংলাতে ২৯ এ ফাল্গুন ১৪৩১ দোল বা হোলি উৎসব পালন করা হবে শুক্রবার।
এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি অবশ্যই সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। দয়া করে আমাদের ফেসবুক পেজ এবং হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলটিকে ফলো করুন।।
Whatsapp channel:- Click Here
Facebook page:- Click Here